Sunday, March 10, 2024

বাংলার শরতে-২

    মুহাম্মদ আবদুর মান্নান ইয়াকুবী 

নীলাকাশে শুভ্র শুভ্র মেঘ সেজে ভেলা,
সূরুজের সাথে করে লুকোচুরি খেলা।

থেমে যায় আকাশের অঝোর কাঁদন,
কৃষাণের ক্ষেতে নামে ফসলি প্লাবন।

ঝিলিমিলি রোধ দিনে রাতে জ্যোৎস্নায়,
প্রশান্তি আনে সবার মনমোহনায়।

দিগন্ত প্রসারি মাঠে বাতাসের সঙ্গে,
নাচে কচি ধান চারা হরষে তরঙ্গেছ।

চারদিকে ফুরফুরে মিষ্টি হাওয়ায়,
তৃণে আর পল্লবে নাচন চালায়।

সমীরণে নেই ধুলো আর অগ্নিতাপ হৃদয়েও থাকে না কারো বেদনার চাপ

হালকা কুয়াশাবৃত থাকে ভোরবেলা,
ঘাসের ডগায় থাকে শিশিরের মেলা।

রবির আলোয় প্রাতে শিশিরের বিন্দু
ঘাসঢাকা মাঠ করে মুক্তাবৎ সিন্ধু।

বিলেঝিলে প্রস্ফুটিত  রূপ শাপলার 
ম্লান করে অপরূপ ব্যোমের তারার।

জলেভাসা দাম থেকে বেগুনি সজ্জায়
মাথা তুলে কলমির কুঁড়িটা দাঁড়ায়,

জুঁই, কেয়া, হাস্নাহেনা, শিউলি, মালতি,
বনরাজি করে রাখে সুশোভিত অতি।

মাধবি বকুল ফুল ফোটে বনে বনে,
কামিনির ঘ্রাণে মন ভরে নিশিক্ষণে।
,
ধবধবে শ্বেতপরী ফুটন্ত কাশফুল, 
নাচিয়ে মাতিয়ে  রাখে খাল নদীকুল।

বাতাসের সাথে এরা প্রাণ খোলে নাচে
পরীনাচ হার মানে এ নাচের কাছে।

কুড়িয়ে শিউলিফুল প্রাতে পল্লিবালা,
গলা ও খোঁপায় পরে গেঁথে এর মালা।

আমড়া, পেয়ারা, তাল,বেল, কামরাঙ্গা
আরো নানা ফুলে ফলে বঙ্গ থাকে চাঙ্গা।

ভরা নদী দিয়ে তরি ঢেউ তোলে চলে,
ডিঙ্গি নৌকা থেকে জেলে জাল ফেলে জলে।

 চকাচকি, গাঙচিল আর বালিহাস,
কানন থাকে পাখির গানে মুখরিত,
শান্ত নিসর্গে সবার মনে করে প্রীত।

সৌম্য শরতে রূপের থাকে ঝলকানি,
তাই তাকে বাংলায় বলি ঋতুরাণী।












No comments: