Monday, March 30, 2020

শান্তির পায়রা না ওড়ার কারণ

শান্তির পায়রা না ওড়ার কারণ

      মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

যা বলে লোক করে না তা
যা করে তা বলে না,
গালভরা সব কথা চলে
কর্মে কথার মিল হয় না।
তাইতো একে অন্যের ওপর আস্থা এখন রাখে না-
এ কারণে শান্তির পায়রা এখন কোথাও ওড়ে না।

এ সমাজে লোকজন এখন 
বাস্তবতায় দেখা যায়,
থাকে লিপ্ত পরচর্চা, মিথ্যা
লোভ আর ছলনায়।
আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা কেউ নিয়ম-নীতি মানে না-
একারণে শান্তির পায়রা এখন কোথাও ওড়ে না।।

ভাল কর্মের আদেশ নেই আজ
অসৎ কর্মে নেই বাঁধা,
কেবল গায়ের জোর থাকলে হয়
এ সমাজেে শাহ্জাদা।
তাই সমাজে নিরীহদের দুঃখের সীমা থাকে না-
এ কারণে শান্তির পায়রা এখন কোথাও ওড়ে না।।

সবে নিজকে জ্ঞানী ভাবে
বিজ্ঞজনে পায় না দাম,
উজ্জ্বল জাতির তালিকায় তাই
থাকিতছে না কারো নাম।
লোকজন এখন কি জানে না তাও কিন্তু জানে না-
এ কারণে শান্তির পায়রা এখন কোথাও ওড়ে না।।

শাস্ত্রের কথা শুনলে যেন
অন্তরে পায় সবে শূল,
সমাজে তাই সর্বকাজে
মানুষ করে প্রায়ই ভুল-
ঐক্য এবং সম্প্রীতিতে সমাজে কেউ থাকছে না-
এ কারণে শান্তির পায়রা এখন কোথাও ওড়ে না।।
                   .......

Friday, March 27, 2020

হযরত শাহ্ আবদুল জব্বার (রহঃ) স্মরণে

হযরত শাহ্ আবদুল জব্বার (রহঃ) স্মরণে

    মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

কথা, কাজ আর চিন্তায় মরহুম সূফী আবদুল জব্বার 
কলজয়ী এক পীরে কেবলা ছিলেন বীর চট্টলার।

ইহকাল ও পরকালীন মানুষের কল্যাণে ,
কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যান তিনি মনে প্রাণে ।
সর্ব কর্ম করতেন তিনি সন্তুষ্টিতে খোদার,
মনটা আদৌ ছিল না তার মোহমুগ্ধ ধরার।

শিরক, বেদাত, মিথ্যা এবং কুফরী উৎখাতে,
আপোষহীন বীর ছিলেন তিনি বঙ্গের চট্টলাতে।
এ কারণে গড়েন তিনি দ্বীনি  শিক্ষার এক দ্বার ,
বায়তুশ শরফ নামে যেটি গর্ব এ চট্টলার।।

সৃষ্টির সেরা মানুষ হচ্ছে স্রষ্টার প্রতিনিধি ,
তাইতো তাকে মানতে হবে খোদার দেয়া বিধি ।
বান্দার মেলে যে বিধিতে আল্লাহ তালার দিদার,
এ  জাতীয় শিক্ষা ছিল এ হুজুরে কেবলার।।

সর্বহারা ,পঙ্গু, অনাথ এবং গরীব লোকের 
দেখলে কোমল প্রাণটা, কাঁদতো জব্বার শাহ্ হুজুরের।
ঘুচাতে সব দুঃখ-গ্লানি আর্ত মানবতার,
দেশে বহু প্রতিষ্ঠান তার আছে গর্ব করার।।
                                                                           দু শতাধিক প্রতিষ্ঠান তার দেশে সবার জানা, 
হেফজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মক্তব-এতিমখানা। 
আছে আরো সুপ্রতিষ্ঠান কারিগরি শিক্ষার, 
গড়েছেনও চিকিৎসালয় রুগীর সেবা দেয়ার।।

তাঁর এ সকল প্রতিষ্ঠানে দুঃস্থ অগণিত ,
ধন্য হয়ে নিজের দেশে আছেন প্রতিষ্ঠিত ।
তারা হলেন আলিম, হাফিজ, কারী, শিক্ষক, ডাক্তার,
আরো আছেন মেজিষ্ট্রেট ও খ্যাত ইঞ্জিনিয়ার।।

চট্টগ্রামে স্থিত আছে ইসলামি ভার্সিটি,
স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠাণ তাঁর উদ্যোগের স্মৃতি।
যে ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা  মন কেড়ে নেয় সবার,
সেটি দেশে গড়তে ছিল তাঁর অবদান অপার।।

বিলাস বহুল গাড়ি-বাড়ি করেননি নিজ তরে
রাখেননি নিজ স্বার্থে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করে।
ধার ধারেননি এই দুুুনিয়ার সকল লোভ লালসার অসংখ্য দ্বার খোলেন শুধু মানব সেবা করার।।

বহু পীরকে দেখে লোকে শিষ্যগণে দিতে ,
নিত্য উপঢৌকন শুধু দোয়া খায়ের নিতে ।
মুরিদানের দানে তারা গড়ে টাকার পাহাড়
কিন্তু কভু কাজ করে না দেশে সমাজ সেবার।।  

দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি পাওয়ার তরে
জব্বার হুজুর গড়েন শিষ্য খোদা প্রেমী করে ।
শিক্ষা দিতেন শিষ্যগণকে পাক কোরআন ও সুন্নার,
সেখাতেনও সৃষ্টির সেবা আল্লাহকে পাওয়ার।।

 দেশে যতো সেবামূলক আছে তাঁর প্রতিষ্ঠান, 
সবগুলোতে হয়ে থাকে আমজনতার  কল্যাণ।
মনে তখন জাগে শুধু অনেক প্রশ্ন বার বার,
 সরকার ছাড়া পারে কি কেউ করতে এসব কারবার।। 

ছিলেন না এ ধরায় তিনি মোটেও বিত্তবান ,
ছিল শুধু খোদাপ্রেমে নিবেদিত তার প্রাণ ।
শিষ্যদেরও মন ছিল ওই খোদাপ্রীতির আধার ,
তাইতো তাদের কর্মে  তুষ্টি ছিল সৃষ্টিকর্তার।।

সত্য, নীতি , উদারতা, ঐক্য ও সম্প্রীতি ,
মেনে চলার মাধ্যমে হয় ইসলাম ধর্মের রীতি।
ওই রীতিতে গড়ে তোলেন তাঁর সব শিষ্য আর
একতার বন্ধনে তারা ছিলেন একাকার।। 

নিঃস্বার্থে দান করলে এবং থাকলে ঐক্য কাজে 
শান্তি সুখের হিল্লোল জাগে মানুষের সমাজে।
সেবামূলক এত কাজ আর এত সফলতার ,
মূলে ছিল এ চেতনা এ পুণ্যবান বান্দার।। 

পীর হয়েও ছিলেন তিনি সম্রাট মুকুটবিহীন,
জনসেবার হাট বসতো তাই তার দরবারে রাতদিন। দোয়া খায়ের বন্দেগী আর সেবা দিয়ে সবার,
গড়ে তুলতেন সেতুবন্ধন সৃষ্টি ও স্রষ্টার।।

অতি মধুর চরিত্র তার ছিল ধরাধামে ,
রেখেও যান বহু কীর্তি বাংলার চট্টগ্রামে ।
মহৎকর্মে  স্মরণীয় আছেন এ পীর বাংলার,
তাঁর তরে তাই জান্নাত যাচি দরবারে পাক আল্লার।।
                      ..........

করোনা ভাইরাস থেকে শিক্ষা

     মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

বিশ্বকে আজ গ্রাস করেছে
    করোনা ভাইরাসে,
হাজার হাজার প্রাণ নিয়েছে
    মাত্র কয়েক মাসে।

মর্তে সবাই এ ভাইরাসের
     ভয়ে এখন কাতর,
কারণ এটি আক্রান্তকে 
    করে রাখে পর।

সেবায় পায় না আক্রান্ত লোক
    আপন বলতে কেহ,
হয়ে থাকে অসহায় তাই
     নিয়ে রুগ্ন দেহ। 

মরলে তাকে দাফন করতে
      যায় না কেহ কাছে, 
এ ভয়ে যে ভাইরাস যদি
    ধরে ফেলে পাছে।

করোনা দেয় এ শিক্ষা যে 
     কেউ নয় আপন ধরায়,
শুধু আপন সৃষ্টিকর্তা
       দয়াবান ও সহায়।
           ........ 
তারিখঃ ২৭/০৩/২০২০খ্রি.
    
     



Thursday, March 5, 2020

মুসলিম হত্যার নেপথ্যে

মুসলিম হত্যার নেপথ্যে
             মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

পৃথিবীতে মুসলিম হত্যা
             চলছে এখন উল্লাসে,
করলে তাকে কচুকাটা
             সবাই থাকে সুহাসে।

আজ যেনো সে আজব প্রাণী
              নয় যেনো লোক এ গ্রহের, 
তাইতো বলছে ভিন জাতিরা
              নাম মোছে ফেল্ মুসলিমের।

পেলে মুসলিম মারবি সবে
            রাখবি না কেউ তাকে আর, 
বলছে তারা মুসলিম হচ্ছে
             নীচু জাতি এ ধরার।

তারাই হবে পুরস্কৃত
             যারা মারবে মুসলমান,
হবে আরো নোবেল জয়ী
             থাকবে ধরায় মহীয়ান।

কেনো যে আজ মারছে মুসলিম
         এ প্রশ্নটির নেই জবাব,  
ভয়ে এখন এমন প্রশ্ন
          করার লোকও খুব অভাব।

এ জন্যে সে, যে দিকে যায়
          সে দিকে খায় মার আর মার,
পাচ্ছে না তাই ধরাতলে
            পথও খুঁজে পালাবার।

ছিল সেরা এক কালে সে
              কাঁপতো ধরা তার ভয়ে,
শৌর্যে-বীর্যে বিশ্ববুকে
              থাকতো সদা বিজয়ে।

ধরায় তাকে দেখলে সবে
            বলতো প্রভুর আশীর্বাদ,
এখন কিন্তু দেখতে পায় সে
             নির্যাতনের মরণ ফাঁদ।

কিন্তু কেন হচ্ছে এমন
             বলছি শুনো মুসলমান,
তোমার কাছে তোমার ভায়ের
             একটুও নেই দাম ও মান।

একে অন্যের বিরোধীতায়
         করছো ঐক্যের সর্বনাশ,
নগ্ননাচন চালাও আরো
         দেখলে তোমার ভায়ের লাশ।

গদির লোভে তদানীন্তন
          পাকিস্তানের মুসলমান,
একাত্তোরে বাংলায় করে
           আপন ভাইয়ের রক্তপান।

বাংলাদেশে মুসলমানদের
             সমাজটাকে দেখো আজ,
ভাইয়ে ভাইয়ে কেমন করে
              সাজে নিত্য রণসাজ।

সুন্নি-ওয়াহাব, মাজারপ্রেমী,
              পীর মুরিদ আর ভান্ডারী,
যারা একদল অপর দলের 
                উপর চালায় তরবারি।

সাদ্দাম হোসেন মেরেছিল
                বহু কুর্দী দেশে তার,
লাদেন প্রশ্নে হাজার হাজার
      আফগান মুসলিম হয় ছারখার।

সৌদিয়ারা ইয়ামিনীদের
               মারছে এখন খুব জোরে,
সিরিয়াতে ভাইয়ের মাংস
               ভাইয়ে খাচ্ছে পেঠভরে।

শিয়া-সুন্নি দাঙ্গায় মরে
             বহু মুসলিম ফি বছর,
আরো কত মরছে মুসলিম
             কে রাখতেছে কার খবর।

মুসলিম জাতির পতন হোক তা
              চায় ইহুদী আর খ্রিস্টান,
যাদের সাথে আছে আরো
                মুনাফিক প্রীতির টান।

বিশ্বের কিন্তু অর্থনৈতিক
               অবস্থাটা নিয়ন্ত্রণ,
করার মত মুসলমানদের
              আছে ভুমি, আছে ধন।

তাদের এখন দরকার শুধু
           সম্প্রীতি আর একতা, 
এতে তাদের বাড়বে শক্তি
         থাকবে না আর দীনতা। 

মুসলমানের আছে আরো
               সেরা গ্রন্থ আলকোরআন,
এটি হচ্ছে মানবজাতির
                সব সমস্যার সমাধান।

কোরআন-সুন্নার বিধান মেনে
                  জাগলে মুসলিম একতায়,
সকল জাতি থাকবে তাদের
                    অনুগত এ ধরায়।

তাই এ জাতি দুর্বল করতে
                শত্রুপক্ষের লোক সকল।
মুসলমানদের মাঝে বসায়
                 বিভাজনের নানা কল।

বোকা মুসলিম বোঝে না তা
                  আটকা পড়ে ওই কলে
তখন তাকে মারতে থাকে
                   পাপীষ্ঠদের সব দলে।

যেমনটি আজ মারছে মুসলিম
                 ফিলিস্তিন ও আফ্রিকায়,
কাশ্মীরেও পশুর মত
                  হত্যা চালায় ইণ্ডিয়ায়।

মিয়ানমারে বইছে এখন
                 মুসলমানদের রক্তের ঢল,
দগ্ধ এবং জবাই করে
                 তাদের মারে পাপীর দল।

মোদি সরকার ভেঙ্গে ফেলে
             বাবরি মসজিদ অযোদ্যায়,
প্রতিবাদে ভারতব্যাপী
                   বহু মুসলিম প্রাণ হারায়। 
                   
হায়রে মুসলিম, আর কত কাল
               খেতে থাকবে এমন মার,
পেছন দিকে ফিরে দেখো
                ছিলে তুমি জাতটা কার।

তোমার মাঝে নেই কি সে তেজ
               আলী এবং খালিদের?
দেখলে যাদের শুরু হতো 
                হৃদয়কম্পন জালিমের।

আল্লাহ আর রাসূলপ্রীতি
                 হৃদয়ে দাও ঊর্ধ্বে স্থান,
ইব্রাহীমি খোদাপ্রেমে
                 অগ্নি কর ফুল বাগান।

ভবে করো সৌহার্দ্য আর
                পরামর্শে কাল যাপন,
জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে
                তেজী করো নিজের মন।

গুণের মুসলিম হলে তুমি
                      সুখী হবে ধরাতে,
অগ্রে থাকবে তোমার আসন
                     বিশ্ব থাকবে পশ্চাতে।
                    ......