হযরত শাহ্ আবদুল জব্বার (রহঃ) স্মরণে
মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী
কথা, কাজ আর চিন্তায় মরহুম সূফী আবদুল জব্বার
কলজয়ী এক পীরে কেবলা ছিলেন বীর চট্টলার।
ইহকাল ও পরকালীন মানুষের কল্যাণে ,
কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যান তিনি মনে প্রাণে ।
সর্ব কর্ম করতেন তিনি সন্তুষ্টিতে খোদার,
মনটা আদৌ ছিল না তার মোহমুগ্ধ ধরার।
শিরক, বেদাত, মিথ্যা এবং কুফরী উৎখাতে,
আপোষহীন বীর ছিলেন তিনি বঙ্গের চট্টলাতে।
এ কারণে গড়েন তিনি দ্বীনি শিক্ষার এক দ্বার ,
বায়তুশ শরফ নামে যেটি গর্ব এ চট্টলার।।
সৃষ্টির সেরা মানুষ হচ্ছে স্রষ্টার প্রতিনিধি ,
তাইতো তাকে মানতে হবে খোদার দেয়া বিধি ।
বান্দার মেলে যে বিধিতে আল্লাহ তালার দিদার,
এ জাতীয় শিক্ষা ছিল এ হুজুরে কেবলার।।
সর্বহারা ,পঙ্গু, অনাথ এবং গরীব লোকের
দেখলে কোমল প্রাণটা, কাঁদতো জব্বার শাহ্ হুজুরের।
ঘুচাতে সব দুঃখ-গ্লানি আর্ত মানবতার,
দেশে বহু প্রতিষ্ঠান তার আছে গর্ব করার।।
দু শতাধিক প্রতিষ্ঠান তার দেশে সবার জানা,
হেফজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মক্তব-এতিমখানা।
আছে আরো সুপ্রতিষ্ঠান কারিগরি শিক্ষার,
গড়েছেনও চিকিৎসালয় রুগীর সেবা দেয়ার।।
তাঁর এ সকল প্রতিষ্ঠানে দুঃস্থ অগণিত ,
ধন্য হয়ে নিজের দেশে আছেন প্রতিষ্ঠিত ।
তারা হলেন আলিম, হাফিজ, কারী, শিক্ষক, ডাক্তার,
আরো আছেন মেজিষ্ট্রেট ও খ্যাত ইঞ্জিনিয়ার।।
চট্টগ্রামে স্থিত আছে ইসলামি ভার্সিটি,
স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠাণ তাঁর উদ্যোগের স্মৃতি।
যে ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা মন কেড়ে নেয় সবার,
সেটি দেশে গড়তে ছিল তাঁর অবদান অপার।।
বিলাস বহুল গাড়ি-বাড়ি করেননি নিজ তরে
রাখেননি নিজ স্বার্থে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করে।
ধার ধারেননি এই দুুুনিয়ার সকল লোভ লালসার অসংখ্য দ্বার খোলেন শুধু মানব সেবা করার।।
বহু পীরকে দেখে লোকে শিষ্যগণে দিতে ,
নিত্য উপঢৌকন শুধু দোয়া খায়ের নিতে ।
মুরিদানের দানে তারা গড়ে টাকার পাহাড়
কিন্তু কভু কাজ করে না দেশে সমাজ সেবার।।
দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি পাওয়ার তরে
জব্বার হুজুর গড়েন শিষ্য খোদা প্রেমী করে ।
শিক্ষা দিতেন শিষ্যগণকে পাক কোরআন ও সুন্নার,
সেখাতেনও সৃষ্টির সেবা আল্লাহকে পাওয়ার।।
দেশে যতো সেবামূলক আছে তাঁর প্রতিষ্ঠান,
সবগুলোতে হয়ে থাকে আমজনতার কল্যাণ।
মনে তখন জাগে শুধু অনেক প্রশ্ন বার বার,
সরকার ছাড়া পারে কি কেউ করতে এসব কারবার।।
ছিলেন না এ ধরায় তিনি মোটেও বিত্তবান ,
ছিল শুধু খোদাপ্রেমে নিবেদিত তার প্রাণ ।
শিষ্যদেরও মন ছিল ওই খোদাপ্রীতির আধার ,
তাইতো তাদের কর্মে তুষ্টি ছিল সৃষ্টিকর্তার।।
সত্য, নীতি , উদারতা, ঐক্য ও সম্প্রীতি ,
মেনে চলার মাধ্যমে হয় ইসলাম ধর্মের রীতি।
ওই রীতিতে গড়ে তোলেন তাঁর সব শিষ্য আর
একতার বন্ধনে তারা ছিলেন একাকার।।
নিঃস্বার্থে দান করলে এবং থাকলে ঐক্য কাজে
শান্তি সুখের হিল্লোল জাগে মানুষের সমাজে।
সেবামূলক এত কাজ আর এত সফলতার ,
মূলে ছিল এ চেতনা এ পুণ্যবান বান্দার।।
পীর হয়েও ছিলেন তিনি সম্রাট মুকুটবিহীন,
জনসেবার হাট বসতো তাই তার দরবারে রাতদিন। দোয়া খায়ের বন্দেগী আর সেবা দিয়ে সবার,
গড়ে তুলতেন সেতুবন্ধন সৃষ্টি ও স্রষ্টার।।
অতি মধুর চরিত্র তার ছিল ধরাধামে ,
রেখেও যান বহু কীর্তি বাংলার চট্টগ্রামে ।
মহৎকর্মে স্মরণীয় আছেন এ পীর বাংলার,
তাঁর তরে তাই জান্নাত যাচি দরবারে পাক আল্লার।।
..........