Friday, April 24, 2020

মৃত্যু

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

মৃত্য তোমার ঘাড়ে রাখে
নিত্য আসন তার,
একদিন তোমায় এ ধরাতে
রাখবে না সে আর।
তার শেকলের বন্ধন থেকে পাবে না নিস্তার-
মৃত্য তোমার ঘাড়ে রাখে নিত্য আসন তার।।

দারা-পুত্র, ধন-মান তোমার
সেরা আকর্ষণ,
রাখছ হর্ষ আর জৌলুসে 
উদ্দীপিত মন।
নেইকো তোমার আদৌ খবর আপন ঠিকানার-
মৃত্যু তোমার ঘাড়ে রাখে নিত্য আসন তার।।

এ ধরা নয় কভু তোমার 
স্থায়ী বাসস্থান,
পরকালে হবে তোমার
চির অবস্থান।
সে আবাসের করবে মরণ কাণ্ডারীর কারবার-
মৃত্যু তোমার ঘাড়ে রাখে নিত্য আসন তার।।

পৃথিবীটা পরকালের
পুঁজি করার স্থান।
বিশাল পুঁজি করো মেনে
আল্লাহর বিধান।
নইলে হবে মহাবিপদ সেকালে তোমার-
মৃত্যু তোমার ঘাড়ে রাখে নিত্য আসন তার।।

পাপ বা পুণ্য যা করেছো
ধরায় জীবন ভর,
সে মোতাবেক স্বর্গ নরক
পাবে মৃত্যুর পর।
মরণ আসার আগে দরকার বিষয়টি ভাবার-
মৃত্যু তোমার ঘাড়ে রাখে নিত্য আসন তার।
                 .......





Monday, April 20, 2020

চাল চোরা চেয়ারম্যানের শাস্তির গান


         মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

ধর কান জোরে টান
ওঠবস কর,
চাল চোরা হলি তাই
লাথি খেয়ে মর-
ধর কান জোরে টান ওঠবস কর।।

রিলিফের চাল চুরি  
করবি না আর,  
কান ধরে বল এটি
কাছে জনতার।
নতুবা জনতা দেবে চড় ও থাপ্পর-
ধর কান জোরে টান ওঠ বস কর।।

তোর মত চেয়ারম্যান
দেশে আছে যারা,
জনতার রোষানলে
পড়ে থাকে তারা।
করবি না চাল চুরি, তাই কান ধর-
ধর কান জোরে টান ওঠ বস কর।।

কান ধরা খায় যারা
জনতার কাছে,
ইতরের মত তারা
এ সমাজে বাঁচে। 
নীচুমাথা হয়ে তারা থাকে জনমভর-
ধর কান জোরে টান  ওঠ বস কর।।

Saturday, April 4, 2020

বৃক্ষ

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

সৃষ্টির মাঝে বৃক্ষ সেরা
    আশীর্বাদ আল্লার,
এর মতো নেই উপাকারী
    ধরায় কিছু আর।

বসবাসের যোগ্য রাখে
    বৃক্ষ পৃৃৃথিবীকে,
পুষ্প দিয়ে সুশোভিত
    করে প্রকৃতিকে।

বাঁধা প্রদান করে এটি
   দুর্যোগ আগমনে, 
মৃত ধরায় প্রাণ জাগাতে
    বর্ষে এর কারণে।

পরিবেশের ভারসাম্যও
       বৃক্ষ রক্ষা করে, 
ভূমিতে সে মানবজাতকে
        প্রাচুর্য দেয় ভরে।

গ্রীনহাউজের প্রভাব থেকে 
    বাঁচায় এটি ধরা
অন্যথায় এ ধরা হতো
     তপ্ত মরুর খরা। 

ক্ষিতি থেকে দারিদ্রতা
   বৃক্ষে করে মোচন,
এ কারণে হয় না কারো
    দুঃখের জীবন যাপন।

এটি স্রষ্টার অপূর্ব দান 
    তাই এর দ্বারা ধরায়,
প্রয়োজনের সকল কিছু 
    তৈরী করা যায়।

ফল ফলাদি দিয়ে বৃক্ষ
   বাঁচায় প্রাণীকূল,
এ ছাড়া সব প্রাণী হবে
     ধরাতে নির্মূল। 

 তাইতো বলছি, সচেতন হও 
    বঙ্গের জনগণ,
বৃক্ষ বেশি রোপন করো,
   বন্ধ করো নিধন। 
           ........

রচনাকালঃ ২৭-৯-২০০৭ খ্রি. রাত ১ টা ২০ মিনিট।

Friday, April 3, 2020

মুনাজাত

         মুনাজাত
  মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

সর্ব সৃষ্টির স্রষ্টা তুমি 
  ওহে পরওয়ার,
 দু'হাত তুলে করছি আরজ 
    দরবারে তোমার।

আমাদের সব সৎ প্রচেষ্টা, 
  সৎ চিন্তা আর কাজ, 
কবুল এবং মঞ্জুর করো 
  হে রাজাধিরাজ! 

আমাদেরকে করো শুধু
   তোমার অনুগত,
আর অনুরূপ করো মোদের
   বংশে আসবে যত।

আমাদেরকে দেখাও সঠিক 
    বন্দেগীর পদ্ধতি,
তওবা মোদের কবুল করো
    ওহে অধিপতি!

নিশ্চয় প্রভু তুমি বান্দার 
  তাওবা কবুলকারী,
করুণাময় এবং সকল 
  গুনাহ মোচনকারী।  

ইহকাল আর পরকালে
     চাই মোদের কল্যাণ,
জাহান্নামের অগ্নি থেকে
       দিয়ো পরিত্রাণ। 

তুমি হলে স্রষ্টা মোদের
    আমরা তোমার বান্দা,
তোমার নির্দেশ ভুলে আমরা
     করি নিজের ধান্ধা।

তাইতো মোদের হয়ে গেছে
   পাহাড় সমান পাপ,
দয়াময় হে মহাপ্রভু! 
    করো মোদের মাফ।

বিশ্ব এখন হয়ে গেছে
    মৃত্যুপুরীর মত,
দিবারাত্র চলছে লাশের
    মিছিল শত শত।

এ মরণের জন্যে বেশি
     কবিড-১৯ দায়ী,
প্রাণঘাতি এ ভাইরাস বিশ্বে
       হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী।

এ ভাইরাসের কাছে এখন
     মানুষ অসহায়,
এর থেকে ত্রাণ দাও হে খোদা,
      হও মোদের সহায়।

            ....... 
   



 

Wednesday, April 1, 2020

এপ্রিলপুল কি?

'এপ্রিলপুল' কি?

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

ইংরেজি সনের ৪র্থ মাসের নাম হচ্ছে 'এপ্রিল' (April) এবং পুল (Fool) শব্দের অর্থ হচ্ছে বোকা। অতএব, 'এপ্রিলপুল' মানে এপ্রিল মাসের বোকা। তাই, কারা এ এপ্রিল মাসের বোকা সেটি জানার জন্যে ইতিহাস পাঠ একান্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। যাদের এ ইতিহাস জানা নেই, তাদের জন্যে ইতিহাসটি সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরলাম।

এনসাইক্লোপিডিয়া ও ইতিহাস গ্রন্থের বরাতে
ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া সম্পাদিত ‘পহেলা এপ্রিল’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, স্পেনের অত্যাচারিত মানুষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুসলিম বাহিনী ৯২ হিজরি মুতাবেক ৭১১ খ্রি. স্পেনে প্রবেশ করেন। তারাই ইউরোপের মানুষদেরকে জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেন। স্পেনের গ্রানাডা, কর্ডোভা ও অন্যান্য শহরে মুসলমানগণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। তাদের স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালযগুলোতে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। ৭১১-১৪৯২ খ্রি. পর্যন্ত প্রায় আটশ বছর ধরে স্পেন, ফ্রান্স ও পর্তুগাল মুসলমানগণ শাসন করেন। এটি ছিল মুসলমানদের জন্য স্বর্ণযুগ। শেষ দিকে তাঁদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিগণ কুরআন-সুন্নাহ ভুলে গিয়ে দুনিয়ার মায়ায় মত্ত হয়ে যান। নেতার নির্দেশ তাঁরা অমান্য করে চলেন।এতে তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা বেড়ে যায়। তখন তাঁরা স্পেন ছাড়তে বাধ্য হন। ফলে খ্রিস্টানরা মুসলমানদের ক্ষমতা থেকে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন অঞ্চল  ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

আজ থেকে ৫২২ বছর আগে মুসলিম অধ্যুষিত
৮৯৮ হিজরি মোতাবেক ১৪৯৩ খ্রি. রাজা
ফার্দিনান্ড ও রানী ঈসাবেলার যৌথ উদ্যোগে
মুসলিমদের শেষ রাজধানী গ্রানাডা দখল করে নেয়। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, চিকিৎসা, রাজনীতি, স্থাপত্য, শিল্প ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখে মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য রাজা ফার্দিনান্ড এক ভয়ঙ্কর ফন্দি আঁটে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। যুদ্ধে মুসলমানগণ পরাজিত হয়ে রাজা-রানীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এমতাবস্থায় ফার্দিনান্ড ঘোষণা করে, যেসব মুসলিম, মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নেবে, তাদেরকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া হবে। তার ঘোষণায় চল্লিশ হাজার মুসলমান আত্মবিশ্বাসী হয়ে গ্রানাডার বিভিন্ন মসজিদে আশ্রয় নিলেও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। মসজিদের দরজাগুলো বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে মসজিদের মেঝেতে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে তাদেরকে হত্যা করে রাজা ফার্দিনান্ড। ঐতিহাসিক এক বর্ণনা মতে তিন দিন ধরে হত্যার উৎসব চলে। মসজিদের বাহিরেও অসংখ্য মুসলিমকে আগুনে পুড়িয়ে, পাহাড় থেকে ফেলে, সমুদ্রের মধ্যে জাহাজ ডুবিয়ে ও গণজবাই করে হত্যা করে। অনেক মুসলিমকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে। অথচ মুসলমানগন এ রকম একটি অবস্থার জন্য প্রস্তুত না থাকায় সেদিন তাদের এমন করুণ অবস্থার সূচনা হয়। শুধু তাই নয়, সেদিন খ্রিস্টান গুরুর আদেশে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল সূত্র লক্ষ লক্ষ আরবি পুস্তক পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। কেবল মুসলিমগণ নয়, ইয়াহুদীদের উপরও খ্রিস্টানেরা সেদিন একই রূপ অত্যাচার চালায়।

এ সময়ে রাজা ফার্দিনান্ড উপহাস করে বলেছিল,
হায় মুসলমান, তোমরা হলে এপ্রিলের বোকা।
মুসলিমদের মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে বোকা
বানানোর সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে এপ্রিল ফুল পালন করা হয়। ফলে, খ্রিস্টানরা কর্ডোভার সেই ঐতিহাসিক মসজিদটিকে গীর্জায় পরিণত করে। মসজিদের ভেতরে দরজা ও জানালার ফাঁকে ফাঁকে মূর্তি স্থাপন করে। এভাবেই তারা মুসলিম ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে ফেলে। এ ঘটনা ছাড়া আরো দুটি ঘটনার কথা উইকিপিডিয়াতে উল্লেখ থাকলেও বর্ণিত ঘটনাটিই সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ বলে ঐতিহাসিকগণ মত প্রকাশ করেছেন। (দৈনিক ইনকিলাব, ২৮/৩/২০১৫)।

অতএব, মুসলিম দেশে মুসলমানদের এপ্রিলপুল পালন  যুক্তিসঙ্গত নাকি লজ্জাকর তা ভেবে দেখুন।