বাংলার হেমন্তে
মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী
কুহেলী ঘোমটা পরে
এসেছে হেমন্ত,
যেন সে লাজুক নারী
নয় প্রাণবন্ত।
নেই কোনো দৈন্য তার
নেই চপলতা,
দানে তার থাকে তৃপ্তি
থাকে উচ্ছলতা।
কল্যাণী হেমন্তরাণী
আগমনে যার,
বাংলায় এসে থাকে
ধনের জোয়ার।
মাঠ তার আগমনে
ভরে যায় ধানে,
অপার আনন্দ জাগে
কৃষকের প্রাণে।
দিগন্ত প্রসারি মাঠে
দেখে ভরা ধন,
হর্ষে তার এসে যায়
নিরব রোধন।
দেখে তার এ রোদন
ব্যোমে দিবাকর,
ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে দেয়,
আলো দিনভর।
অশোক, শিরিষ চাঁপা
শিমুল, পলাশ,
নিসর্গে ফুটিয়ে দেয়
অপূর্ব সুহাস।
কাশ ফুটে নাচ করে
নদী-খালকুলে,
উষা থাকে সুবাসিত
নানা জাত ফুলে।
দিবালোকে পদ্ম যেন
আবেগে-উচ্ছ্বাসে,
রবিকে সালাম করে
আর নীরে ভাসে।
শশীকে করে সালাম
শাপলারা জলে,
এ যেনো হেমন্তপ্রীতি
ব্যোমে-জলে চলে।
তাল, বেল, নারকেল
লেবু, জামরুল,
পাওয়া যায় এ বঙ্গে
হেমন্তে বিপুল।
নীলাকাশে সাদা মেঘ
আনাঘোনা করে,
রাইফুলের রূপ দেখে
মন যায় ভরে।
আকাশটা থাকে অতি
স্নিগ্ধ ও সুন্দর,
কোথাও মলিনতার
পড়ে না আঁচড়।
ধনেভরা হেমন্ত যা
বিধাতার দান,
রূপসী এ বঙ্গে তার
স্থান মহীয়ান।
.......