Tuesday, January 26, 2021

জিজ্ঞাসা

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

দেশে আজ বয়ে চলে রক্তের প্লাবন,
দিবানিশি থাকে তাই ত্রাসে লোকজন।

নগরে, বন্দরে, গাঁয়ে চলনে, শয়নে,
পাষানেরা মারে লোক প্রতি ক্ষণে ক্ষণে।

চলে সদা উত্তেজনা অস্ত্রের গঞ্জন,
নেই কোথাও শান্তি ও ঐক্যের বন্ধন।

গুম-খুন, লুটপাট, রমণী ধর্ষণে,
রত থাকে পাপি সব পুলকিত মনে।

আদালতে করে শুধু নির্দোষী ক্রন্দন,
অপরাধী পেয়ে যায় প্রাণের স্পন্দন। 

প্রতিদিন জালিমেরা থাকে নিপীড়নে,
শিষ্টের দমন আর দুষ্টের লালনে।

হৃদয়ে রাখে না এরা প্রভুর স্মরণ, 
মৃত্যুর আগে এদের হবে না চেতন।

সজ্জন এখন আর নেই উচ্চাসনে,
থাকে তাই জ্ঞানী আর গুনীরা গঞ্জনে।

লাশের উপরে চলে হরষে নাচন, 
লোকালয়ে বস্ত্র নারী হারায় এখন।

বিদ্যাপীঠ প্রতিদিন থাকে রণে রণে,
শিষ্যদের হাতে মার খায় গুরুজনে।

সন্তানের হাতে ঘটে পিতার মরণ, 
পতির হাতে বৈ পায় অত্যয় এখন।

ন্যায়-নীতি নেই আদৌ দেশে প্রশাসনে,
পুরো দেশ ত্রাসে গ্রাস করে একারণে।

হরণে লিপ্ত সবাই নিরীহের ধন,
আসে না কেউ দুর্নীতি করতে ধমন।

নেই কোনো স্বাধীনতা  ব্যক্তির জীবনে,
সবার দিবস কাটে আর্তির দহনে।

এ জাতির হয় যদি এমনি পতন,
ছিল কি স্বাধীনতার কোনো প্রয়োজন?


 

কদর রাতের সৌজন্যে

কদর রাতের সৌজন্যে)

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

পুণ্যময় এ কদর রাতে
শুনো প্রভু প্রার্থনা,
দূর করে দাও ধরা থেকে
মুসলমানদের যন্ত্রণা-
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

মুসলিম নিধন বিশ্বের নানা
দেশে চলছে, থামছেনা,
যারা চালায় নিধন কর্ম
দাও তাদেরকে গঞ্জনা।
পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

যারা এখন ভোগছে ধরায়
স্বজন হারার বেদনা,
জাগাও তাদের মনে খোদা
বিয়োগ ব্যাথার শান্তনা-
পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

শীঘ্রই তাদের রক্ষা করো
ধ্বংসের মুখে রেখো না,
মুক্তি পেতে দাও তাদেরকে
শক্তি, সাহস, চেতনা-
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

তাদেরকে দাও ঈমানী বল
একতার দাও প্রেরণা,
জ্ঞান-বিজ্ঞানে খোল তাদের
সুখ-সমৃদ্ধির মোহনা-
পুণ্যময় এ কদর রাতে শোনো প্রভু প্রার্থনা।।

মৃত মুসলিম নর-নারীর 
আত্মায় আযাব দিও না,
করছি আমি তাদের জন্যে
তোমার কৃপা কামনা।
 পুণ্যময় এ কদর বাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

পিতা-মাতার জন্যে প্রভু
জান্নাত করছি যাচনা,
পরকালে তারা যেনো
পায় না আদৌ লাঞ্চনা-
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

সত্য পথের পথিক করে
রেখো মোমিন-মো'মেনা,
কদর রাতের বরকত থেকে
কাউকে নিরাশ করো না-
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।

দোয়া আমার কবুল করো;
গুনা করো মার্জনা,
কদরে চাই তোমার দিদার
এর বেশি আর চাইবো না-
পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

চরিত্রবান হওয়ার তরে
বাড়াও মনে এষণা
প্রিয়ভূমি রক্ষার্থেও
দাও সাহসী প্রেষণা-
পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

বিশ্বে সকল জাতির উপর
ঝরাও প্রীতির ঝরনা,
না হয় যাতে তাদের মাঝে
বাড়াবাড়ির সূচনা-
 পুন্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।

বিশ্বকে আজ লন্ডভন্ড 
করছে ভাইরাস করোনা,
মহামারী এ ভাইরাসকে
দূর করে দাও রাব্বানা।
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শোনো প্রভু প্রার্থনা।।

হে দয়াবান, তোমার দয়ার
হয় না কোন তুলনা,
বিশ্ববাসী সুখে রেখো
বর্ষণ করো করুণা-
 পুণ্যময় এ কদর রাতে শুনো প্রভু প্রার্থনা।।
                      ......

Saturday, January 23, 2021

কচি বীরের গান

  কচি বীরের গান

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

চল্ চল্ চল্
চলরে কচির দল,
সফলতা কেড়ে আনতে
বীরের বেশে চল্।
চল্ চল্ চল্, চলরে কচির দল-
সফলতা কেড়ে আনতে বীরের বেশে চল্।।
  
আমরা কচি, সত্যের মসি
গড়ব ধরাতল,
রুখতে মোদের নেইকো এমন
কারো বাহুবল।
আমরা থাকি বাঘের মতো
শক্তিতে উচ্ছল--
চল্ চল্ চল্, চলরে কচির দল,
সফলতা কেড়ে আনতে বীরের বেশে চল্।।

চাঁদ হতে আয় রজনীতে
সূর্য হতে দিনে,
দিবানিশি আলোশূন্য
হবে আমরা বিনে।
মোদের অসি, পাপী নাশী
দেশ করবে উজ্জ্বল -
চল্ চল্ চল্, চলরে কচির দল,
সফলতা কেড়ে আনতে বীরের বেশে চল্।।




  
      

Thursday, January 14, 2021

বিত্তবানে ইসলামি নির্দেশ

বিত্তবানে ইসলামি নির্দেশ

      মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

কেউবা করে উদরপূর্তি   
   কেউবা মরে ক্ষুধায়,
কেউবা কাটায় আনন্দে দিন
    কেউ কাটায় দিন জ্বালায়।

কেউবা আবার অঢেল সম্পদ
    ভোগ করে যায় একা,
কেউবা বেড়ায় ভিক্ষা করে
     পায় না সুখের দেখা।

কেউবা গড়ে দালানকোঠা 
     পরের সম্পদ লুটে, 
আবার কারো রাতে নিদ্রার
    জায়গাও না জুটে। 

নরকূলে এমন জীবন 
     যদি কারো  চলে,
ইসলাম বলে ধনী তখন
   থাকে পাপীর দলে।

বিত্তবানরা দীনের অভাব
    করবে দূরীকরণ,
ইসলামের এ নির্দেশ তাদের
    রাখতে হবে স্মরণ।

তারা যদি এর অন্যথা 
    করে ইহধামে, 
পরকালে কঠিন শাস্তি
  পাবে জাহান্নামে।
       ........

Friday, January 1, 2021

জিহাদ

জিহাদ কি? কেন? কিভাবে?

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

'জিহাদ' একটি আরবি শব্দ
       বাংলা কিন্তু নয়।
তাই, এ শব্দের অর্থ আগে
      জেনে নিতে হয়।

না জেনে এর অপব্যাখ্য
    করবে যেসব লোক,
বোঝতে হবে নেই যে তাদের
     জ্ঞান, বিবেক ও চোখ।

"চেষ্টা, সংগ্রাম, সাধনা," হয়
        বাংলাতে এর মানে,
এসব অর্থ আছে লেখা
              আরবি অভিধানে।

শরীয়তের বিধান মতে
     জিহাদ বলতে বুঝায়,
করে যাওয়া সত্যের সংগ্রাম
     মহাপ্রভুর রাস্তায়।

আপন জাতি, রাষ্ট্র, ধর্ম
      রক্ষা করতে হলে,
যে সংগ্রামটি চালাতে হয়
       তাকে জিহাদ বলে।

কু প্রবৃত্তির বিরোধিতায়
     সংগ্রাম যদি থাকে,
সুন্নাহ মতে সর্বশ্রেষ্ঠ
      জিহাদ বলে তাকে।

এ জিহাদে কু-প্রবৃত্তির 
     মৃত্যু ঘটায় মনে,
সু-প্রবৃত্তি চাঙ্গা করে
      মনুষ্যত্ব আনে।

থাকে যাদের কুপ্রবৃত্তি
     অন্তরে জাগ্রত,
তারাইতো হয় নরকূলে
     হিংস্র পশুর মত।

যে সমাজে কুপ্রবৃত্তির
    মানুষ করে বাস,
ওই সমাজে মনুষ্যত্বের
    ঘটে সর্বনাশ।

নিত্য চলে সে সমাজে
      গুম, খুন আর দুর্নীতি,
হারিয়ে যায় মানুষ থেকে
      সুখ-শান্তি ও প্রীতি।

তাইতো ইসলাম বলে আগে
     জিহাদ চালাও মনের,
ইহ-পরকালে তবে
      জীবন হবে সুখের।

জাগে যদি মনের ভেতর
     অসৎ কর্মের বান,
মন বিরোধী জিহাদে এর
       ঘটায় অবসান।

জিহাদে হয় দুষ্টের দমন,
   শিষ্টের লালন ধরায়,
এতে সুখের ফুল্লধারা
    মানব সমাজ পায়।

দৈহিক, আর্থিক, বিদ্যাভিত্তিক
      জিহাদের যে বর্ণন,
শরীয়তে উল্লেখ আছে
      রাখতে হবে স্মরণ।

ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম
    পূর্ণ জীবন বিধান,
এ বিধানে সমাজে হয়
      শান্তির সহাবস্থান।

জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে
    শরীয়ার নীতিতে,
সবে সবার মূল অধিকার
      পাবে নিজ ভূমিতে।

এমন নীতি রুখতে  যারা
        অস্ত্র ধরে ভবে,
দৈহিক জিহাদ সবার উপর
        তখন ফরজ হবে।

যে জ্ঞান চর্চায় দেশ ও জাতির
        উন্নয়নটা আনে,
বিদ্যাভিত্তিক জিহাদ হয় তা
       ইসলামের বিধানে।

বক্তৃতা আর লেখালেখি
        আনলে সত্যের জোয়ার,
সেটিও হয় জ্ঞানের জিহাদ
       জানা খুব দরকার।

অর্থ-সম্পদ করলে ত্যাগ
      মানুষের কল্যাণে,
আর্থিক জিহাদ বলে তাকে
     হাদিস ও কোরআনে।

জিহাদ হবে খোদার রাস্তায়
      ব্যক্তিস্বার্থে নয়,
স্বার্থ রক্ষার জিহাদে হয়
      শয়তানের বিজয়।

এ বিজয়ে চলে তখন
      ত্রাসের রাজ্য ধরায়,
তখন পুরো মানবসমাজ
        মনুষ্যত্ব হারায়।

খোদার রাস্তায় জিহাদ হচ্ছে
       শ্রেষ্ঠ ইবাদত,
জিহাদকালীন মৃত্যুহলে
        মেলে শাহাদত।

প্রতিদান হয় শাহাদাতের
       উৎকৃষ্ট জান্নাত,
যা'' পেতে সব ঈমানদারে
       যাচে দিন ও রাত।

পুণ্যপথে জিহাদকারী
     খোদার দিদার পায়,
জিহাদে তাই মোমিন বান্দা 
      জীবনাবসান চায়।
                 ......