জিহাদ কি? কেন? কিভাবে?
মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী
'জিহাদ' একটি আরবি শব্দ
বাংলা কিন্তু নয়।
তাই, এ শব্দের অর্থ আগে
জেনে নিতে হয়।
না জেনে এর অপব্যাখ্য
করবে যেসব লোক,
বোঝতে হবে নেই যে তাদের
জ্ঞান, বিবেক ও চোখ।
"চেষ্টা, সংগ্রাম, সাধনা," হয়
বাংলাতে এর মানে,
এসব অর্থ আছে লেখা
আরবি অভিধানে।
শরীয়তের বিধান মতে
জিহাদ বলতে বুঝায়,
সত্যের সংগ্রাম করে যাওয়া
মহাপ্রভুর রাস্তায়।
আপন জাতি, রাষ্ট্র, ধর্ম
রক্ষা করতে হলে,
যে সংগ্রামটি চালাতে হয়
তাকে জিহাদ বলে।
কু প্রবৃত্তির বিরোধিতায়
সংগ্রাম যদি হয়,
সুন্নাহ মতে সর্বশ্রেষ্ঠ
জিহাদ তাকে কয়।
এ জিহাদে কু-প্রবৃত্তির
মৃত্যু ঘটায় মনে,
সু-প্রবৃত্তি চাঙ্গা করে
মনুষ্যত্ব আনে।
থাকে যাদের কুপ্রবৃত্তি
অন্তরে জাগ্রত,
ধরাতে হয় স্বভাব তাদের
হিংস্র পশুর মত।
যে সমাজে কুপ্রবৃত্তির
মানুষ করে বাস,
ওই সমাজে মনুষ্যত্বের
ঘটে সর্বনাশ।
নিত্য চলে সে সমাজে
গুম, খুন আর দুর্নীতি,
হারিয়ে যায় মানুষ থেকে
সুখ-শান্তি ও প্রীতি।
তাইতো ইসলাম বলে আগে
জিহাদ চালাও মনের,
ইহ-পরকালে তবে
জীবন হবে সুখের।
জাগে যদি মনের ভেতর
অসৎ কর্মের বান,
মন বিরোধী জিহাদে এর
ঘটায় অবসান।
জিহাদে হয় দুষ্টের দমন,
শিষ্টের লালন ধরায়,
এতে সুখের ফুল্লধারা
মানব সমাজ পায়।
দৈহিক, আর্থিক, বিদ্যাভিত্তিক
জিহাদের যে বর্ণন,
শরীয়তে উল্লেখ আছে
রাখতে হবে স্মরণ।
ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম
পূর্ণ জীবন বিধান,
এ বিধানে সমাজে হয়
শান্তির সহাবস্থান।
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে
শরীয়ার নীতিতে,
সবে সবার মূল অধিকার
পাবে নিজ ভূমিতে।
এমন নীতি রুখতে যারা
অস্ত্র ধরে ভবে,
দৈহিক জিহাদ সবার উপর
তখন ফরজ হবে।
যে জ্ঞান চর্চায় দেশ ও জাতির
উন্নয়নটা আনে,
বিদ্যাভিত্তিক জিহাদ হয় তা
ইসলামের বিধানে।
বক্তৃতা আর লেখালেখি
আনলে সত্যের জোয়ার,
সেটিও হয় জ্ঞানের জিহাদ
জানা খুব দরকার।
অর্থ-সম্পদ করলে ত্যাগ
মানুষের কল্যাণে,
আর্থিক জিহাদ বলে তাকে
হাদিস ও কোরআনে।
জিহাদ হবে খোদার রাস্তায়
ব্যক্তিস্বার্থে নয়,
স্বার্থ রক্ষার জিহাদে হয়
শয়তানের বিজয়।
এ বিজয়ে চলে তখন
ত্রাসের রাজ্য ধরায়,
তখন পুরো মানবসমাজ
মনুষ্যত্ব হারায়।
খোদার রাস্তায় জিহাদ হচ্ছে
শ্রেষ্ঠ ইবাদত,
জিহাদকালীন মৃত্যুহলে
মেলে শাহাদত।
প্রতিদান হয় শাহাদাতের
উৎকৃষ্ট জান্নাত,
যা'' পেতে সব ঈমানদারে
যাচে দিন ও রাত।
পুণ্যপথে জিহাদকারী
খোদার দিদার পায়,
জিহাদে তাই মোমিন বান্দা
জীবনাবসান চায়।
......