আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান রেলওয়ে পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যে-সদস্যা ও এর সাথে সম্পৃক্ত সকলের কাছে আমার প্রতি আন্তরিক ভালোবাসার জন্যে আমি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞ। ..........
আমি মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী, সহকারী প্রধানশিক্ষক, রেলওয়ে পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম, ২য় বার হৃদরোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে ন্যাশনাল হসপিটাল, চট্টগ্রামে আই সি ইউ-তে পাঁচ দিন ( ২৬-০৬-২০২৪ থেকে ৩০-০৬-২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত) চিকিৎসাধীন ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহর অশেষ দয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়ে বর্তমানে নিজ আলয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি। এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রি. থেকে ০৩ অক্টোবর ২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত মোট দশ দিন একই রোগে এ হসপিটালে আই সি ইউ-তে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ১ম বার এবং এবার হসপিটালে থাকাকালীন সময়ে আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রেলওয়ে পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বনামধন্য ও সুযোগ্য মাননীয় প্রধান শিক্ষক মো. শরীফুল ইসলাম শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও আমাকে দেখার জন্যে প্রতিদিন হসপিটালে গমন করতেন এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতেন। প্রথম বার যখন আমি ন্যাশনাল হসপিটাল চট্টগ্রামে আই, সি, ইউ-তে চিকিৎসাধীন ছিলাম তখন তিনিই আমার রোগমুক্তির জন্যে সবার কাছে দোয়া চেয়ে FB-তে পোস্ট দিয়েছিলেন। এতে আমার অসুস্থতার কথা দেশ-বিদেশে প্রচারিত হলে বহু লোক আমার রোগমুক্তির জন্যে দোয়া করেন এবং দেশ ও বিদেশ থেকে অনেকে আমার খোঁজখবর নেন। এছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত সভাপতি, সকল সদস্য, শিক্ষক -শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রী মাঝে মধ্যে আমার খোঁজখবর নেয়ার জন্যে হসপিটালে আসা যাওয়া করতেন এবং বিধাতার নিকট আমার রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করতেন। সম্মানিত শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে বিদ্যালয় আরম্ভ হওয়ার পূর্বে এসেমব্লির পরে সকল ছাত্র-ছাত্রী আমার জন্যে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনাও করেছিলেন। সত্যিকর অর্থে একজন মুমূর্ষু রুগী তার আপনজন, বন্ধু-বান্ধব ও শুভার্থীদের কাছ থেকে এমনটিই কামনা করে থাকে। এটি আমি আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান রেলওয়ে পাবলিক স্কুল পরিবারের সকল সদস্য থেকে পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার প্রতি এহেন হৃদ্যতার জন্যে আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিগত প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমি এ জটিল রোগে ভোগছি। আমার এ রুগ্ন অবস্থায় প্রধানশিক্ষক মহোদয় বিদ্যালয়ে তাঁর নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমার প্রায় দায়িত্ব তিনি পালন করতেন। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাগণও আমার কাজে আমাকে তাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আমার কর্মের চাপ কমিয়ে দিতেন । প্রথম বার আই সি ইউ থেকে রিলিজ পাওয়ার পর মাননীয় প্রধানশিক্ষক, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও সকল সদস্য আমকে চিকিৎসা ছুটিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে এমন দুরাবস্থায় আমাকে যে কৃতার্থ করেছেন তা আমি আমৃত্যু স্মরণ রাখবো এবং তজ্জন্য চির কৃতার্থ থাকবো। আমার প্রতি আমার এ বিদ্যালয়ের সকল সদস্যের এহেন আন্তরিকতা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনে সত্যিই আমি বিমোহিত, গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। পরিশেষে আমি আমার রোগমুক্তির জন্যে সকলের নিকট দোয়ার আবেদন করছি। আমি চাকুরী থেকে অবসরে যাচ্ছি আগামী২৫-০১-২০২৫ খ্রি. তারিখে, যা আর মাত্র পাঁচ মাস বাকি। রোগের জটিলতার কারণে আমার পক্ষে বিদ্যালয়ে সবার সাথে মিলেমিশে স্বীয় দায়িত্ব পালন করা আদৌ সম্ভবপর হচ্ছে না বিধায় আমি অন্তর জ্বালায় ভোগছি। অত্র বিদ্যালয়ে বিগত বিশ বছরের মায়া আমার হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। এ মায়ার বিচ্যুতি যে কতই বেদনার তা' আমার মতো ভুক্তভোগী ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। যাহোক, এ বিদ্যালয়ে বিশ বছর কর্মকালীন সময়ের শুরু থেকে অদ্যাবধি আমার কোনো আচার-আচরণে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীসহ বিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট যে-কেহ মনে কোনো প্রকার ব্যথা পেয়ে থাকলে তজ্জন্য আমি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি। সবাই আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা করে দেবেন।
মহান আল্লাহ আমার প্রিয় স্বনামধন্য রেলওয়ের পাবলিক স্কুল পরিবারের সকল সদস্যকে শারিরীক সুস্থতাসহ সার্বিক কল্যাণ দান করুক এবং বিদ্যালয়টির উত্তরোত্তর সফলতা চিরস্থায়ী রাখুক আর এর বর্তমান কাণ্ডারী মাননীয় প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সকল সদস্য-সদস্যা ও শিক্ষক-শিক্ষিকার কর্মপ্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টির খ্যাতি দেশময় তথা বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ুক। আমিন। সবার প্রতি আবারও সশ্রদ্ধ সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমি আমার মনের আকুতির ইতি টানলাম।
আল্লাহ হাফেজ।।
No comments:
Post a Comment