বাংলার শীতে
মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী
শীতে বঙ্গে প্রকৃতি
মলিনতা পায়,
পীতরঙে রাজ্য গড়ে
শ্যামল পাতায়।
ফুটে উঠে হতাশার
ভাব সবখানে,
আর্তির সুরও যেনো
বাজে কানে কানে।
শীতে আনে সাথে করে
উত্তরীয় বায়,
বিটপীর পাতাগুলো
ধরাতে ঝরায়।
প্রহরীর মত খাড়া
থাকে ন্যাড়া গাছ,
বৈরাগীর মত থাকে
প্রকৃতির ধাঁচ।
অতি রুষ্ট করে শীত
প্রাণীর জীবন,
আলস্যে করে মানুষ
সময় ক্ষেপণ।
ছোট ছোট নদী-খাল
হয়ে গতি হারা
কেঁদে কেঁদে করে যেন
দিবানিশি সারা।
ভোরে লালথালারূপে
রবি হাসে নীলে,
বরণীয় রাখে সবে
তাকে খোশ দিলে।
মধু নিতে রাইফুলে
ছুটে মধুকর,
আগুন পোহাতে জমে
পল্লিতে আসর।
ডানা মেলে রোদে পাখি
করে থাকে গান,
রূপের বাহারে এরা
থাকে মহীয়ান।
রসনায় সরসতা
দেয় শীতকাল,
রসে তৈরী শীতপিঠা
মাতায় সকাল।
লেপমোড়া সুখনিদ্রা
চলে রাত ভর,
তাইতো লেপের থাকে
আলাদা কদর।
কনকনে শীতে চাষী
মাঠে কাজ করে,
গাঁয়ে নারী কর্মব্যস্ত
থাকে ঘরে ঘরে।
নানা তরু-তরকারী
থাকে ক্ষেতভরা,
ডোবা ও পুকুরে মাছ
পড়ে খুব ধরা।
কুল, কমলা, ডালিম,
বেল কামরাঙ্গা,
আরো নানা ফলে থাকে
পল্লিগ্রাম চাঙ্গা।
গোলাপ, মল্লিকা, বেলি
সূর্যমুখি ফুলে,
হাসির ঝিলিক ফুটে
প্রভাতের কোলে।
শীতে, নাশে দীন আর
মানে ধনবান,
অথচ দীনেরা করে
শীত মহীয়ান।
.....
(ঈষৎ পরিবর্তিত)
No comments:
Post a Comment