Monday, June 17, 2024

দাও মুমিন কুরবান

দাও মুমিন কুরবান
       মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ আজ
দাও মুমিন কোরবান,
নিজের ভেতর জাগিয়ে দাও
ইব্রাহীমী প্রাণ।
শূন্যমনে পূর্ণ করো ঈসমাঈলী ধ্যান-
জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কোরবান।।

মনে জাগা পশুটাকে
জবাই করো আগে,
সুপ্রবৃত্তি মনে যেন
চাঙ্গা হয়ে জাগে।
কোরবানীতে মনটাকে আজ করো মহীয়ান-
জিলহজ্বে মাসের দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কোরবান।।

কোরবানিটা ত্যাগের উৎসব
ভোগের উৎসব নয়,
মনের ভেতর রাখতে হবে
সৃষ্টিকর্তার ভয়।
সর্বপ্রীতির ওপর রেখো খোদাপ্রীতির স্থান-
জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কোরবান।।

ইব্রাহীমের ত্যাগের শিক্ষা
কুরবানিতে পাবে,
মানতে হবে সে মোতাবেক
খোদার আদেশ ভবে।
ত্যাগ করা চাই প্রয়োজনে ধন-মান, জন আর প্রাণ-
জিলহজ্বেমাসের দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কোরবান।।

খোদার নূরে মনটা রেখো
নিত্য আলোময়,
হিংসা-বিদ্বেষ আর লোভমুক্ত
রেখো নিজ হৃদয়।
সৃষ্টির সেবায় সাধ্যমত রেখো অবদান-
জিলহজ্বে মাসের  দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কোরবান।।

ধৈর্য, সত্য, উদারতা 
রেখো মনের মাঝে,
পাপাচারের সুরটি যেনো
হৃদয়ে না বাজে।
এ প্রতিজ্ঞায় কবুল হোক আজ মোমিনদের কুরবান-
জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ আজ দাও মুমিন কুরবান।।

Sunday, June 16, 2024

মহনবীর নবুয়ত প্রাপ্তি নিয়ে দুজন সুন্নি আলেমের মাঝে তর্ক প্রসঙ্গে

তারা দুজনই সুন্নি জামায়াতের আলেম এবং একই গ্রুপের লোক বলে প্রতিয়মান হয়। মহানবী (স.) এর নবুয়ত সম্পর্কে তাদের ব্যক্তিগত মতামত প্রতিষ্ঠিত  করার জন্যে তারা নাটকটি সাজিয়েছেন। এটি যে একটি সাজানো নাটক তা তাদের এ আলাপচারিতা দ্বারা  সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। তবে এ কথা ঠিক যে, বিজ্ঞ শায়খদের কাছে এসব সুন্নি আলেম এ বিষয়ে দলিল এবং যুক্তিতে যে  দাঁড়াতে পারবে না তা নিশ্চিত। তাদের লজ্জা থাকলে এক্ষনি এসব তর্কবিতর্ক বন্ধ করে তাদের নিজেদের মান সম্মান রক্ষা করা উচিত। তুচ্ছ বিষয়ে তাদের এহেন বাড়াবাড়ি পবিত্র ধর্ম ইসলামের ভাবমূর্তিকে বিজাতির কাছে খাটো করে তুলছে।

হযরত মুহম্মদ সা. মানব সৃষ্টিতে প্রথম থেকে আল্লাহ কর্তৃক সর্বশেষ নবী হিসেবে নির্ধারিত ছিলেন। তাই সকল নবীগণের পরে আল্লাহ উনাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেন। দুনিয়াতে উনার চল্লিশ বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে মহান আল্লাহ তাঁকে সর্বশেষ নবী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নবুয়তের দায়িত্ব প্রদান করেন। এ সুন্নি আলেম যে হাদিসটি এখন বর্ণনা করছেন সে হাদিসের মর্মবাণী এটাই। আল্লাহ সকলকে বুঝার তৌফিক ও হিদায়ত দান করুন। আমীন। এ ছাড়া মহানবী (স.) এর নবুয়ত প্রাপ্তি  সম্পর্কে অন্য কোনো যুক্তি বা কোনো কথা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য ওসমর্থনযোগ্য হবে না।

Friday, June 14, 2024

ভন্ড সমাচার

ভন্ড সমাচার
       মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

ভন্ডদের আজ কদর বেশি
              বাংলাদেশের ভেতরে,
ভক্তি তাদের করে বহু
              মানুষরূপী ইতরে।

নেইকো তাদের ধর্মীয় জ্ঞান
            দেখায় ধর্মে শ্রদ্ধা খুব, 
শয়তানেরই চেলা তারা
            বেশভূষায় নেয় অলীর রূপ।

খানকায় বসায় গাঁজার আসর
            মারে গাঁজায় নেশারটান,
মাতালামি আর আস্ফালনে
          চালায় জিকির, করে ধ্যান।

পীরে গাহে বাউল গীতি
          ভক্তরা কয় ইল্লাল্লাহ,
গান-জিকিরে কাঁপায় তারা
        খানকাসহ মহল্লা।

নাচ-গান- মদ আর জেনায় তাদের
             খানকা থাকে সরগরম,
বিজ্ঞজনে দেখলে তাদের
               বলে পাপী, বেশরম।

জাহান্নামের পথিক হবে
          চললে তাদের পথ ধরে,
শাস্ত্রবিদদের কথা এখন
            শোনে না সব বর্বরে। .

Wednesday, June 5, 2024

বাংলার গ্রীষ্মে

  বাংলার গ্রীষ্মে
     মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

গ্রীষ্মে রবি দীপ্তহাসি নভলোকে হাসে
যে হাসিতে অগ্নিদাহ বসুমতি নাশে।

দহনে তার  পথ ও প্রান্তর শুধু খাঁ খাঁ করে,
ঘর-দুয়ার আর মাঠ-ঘাট যেন অগ্নিতে  যায় ভরে।

পথিক এবং পশু পাখি পানির পিপাশায়,
ছটপট করে থাকে যেন বক্ষ ফেটে যায়।

ছোট নদী, ডোবা,খাল আর বাপী আছে যত, 
কেঁদে কেঁদে মাগে যেন পানি অবিরত।

সূর্যের প্রখর তাপে গাঁয়ে বাতাসের আশায়
বসে বসে লোকজন সময় কটায় গাছ তলায়।

খরার তাপে ভস্ম করে সোনালি ফসল,
নিঃস্ব হয়ে কৃষাণেরা ফেলে চোখের জল।

পাড়া-গাঁয়ে নেমে আসে মহামারী রোগ,
ঘটে এতে মৃত্যু এবং নানারূপ দুর্ভোগ।

 অনাবৃষ্টি দেখা দিলে পল্লিতে লোকজন, 
মহাপ্রভুর কাছে শুধু করে আবেদন।

মাঝে মাঝে কালবোশেখি বীরত্বের ভাব দেখায়,
প্রবল  উন্মাদনায় আরও প্রলয়ের নাচ চালায়। 

গাছপালা ফুল, ফসল, শস্য, কুটির আর সব বন
শিকারে হয় পরিণত করলে সে নাচন।

জরা-জীর্ণ যত কিছু থাকে এ ধরায়,
তাড়িত হয় সবগুলো তার নাচনের লীলায়।

তার প্রলয়ের নাচের শাড়ির রঙ কুচকুচে কালো,
দ্রুত ঢেকে ফেলে এটি দিনের উজ্জ্বল আলো।

আনন্দে সে বজ্রনাদে চালায় বিজলির খেলা,
মাঝে মধ্যে তাজা তাজা প্রাণ নিয়ে যায় মেলা।

বিদ্রোহী এক বীরের মত হয়ে আগুয়ান,
প্রবীনে সে দিয়ে থাকে নবীনেরই প্রাণ।

জাগে এতে নবীনেরা নব উদ্দীপনায়,
রঙতরঙ্গে যেন তারা সমগ্র দেশ ভাসায়।

নিশিকালে চলে গাঁয়ে গীতি সারী-জারী 
আঙ্গিনাতে গল্প নিয়ে বসে পল্লিনারী।

জ্যোৎস্নারাতে পল্লিগ্রামে নৈশভোজের পরে,
লোকজন বসে গল্প করে উন্মুক্ত প্রান্তরে।

সমগ্র দেশ উৎসব মূখর থাকে নাচ-গান-মেলায়,
দোকানিদের হালখাতা আর মাঠে বলিখেলায়।

পল্লিগাঁয়ে ওড়ে ঘুড়ি নীলাকাশের পানে,
নানা রঙের ঘুড়িতে ব্যোম সাজে সর্বখানে।

সোনালু, জুঁই, কৃষ্ণচূড়া,বেলি, গন্ধরাজ,
আরো বহু ফুলে থাকে গ্রীষ্মকালের সাজ।

গাছে গাছে সুমিষ্ট ফল ঝুলে থরে থরে,
বৃক্ষশাখা মুখর রাখে পাখিরা গান করে।

ভরা থাকে আম, জাম, লিচু আনারস কাঠাল,
 মধুফলে প্রাণটা শীতল করে গ্রীষ্মকাল।

রসনাতে সরসতা গ্রীষ্মে করে দান,
যদিও তার দহনে হয় ধরনীটা ম্লান।

                      ........

Tuesday, June 4, 2024

বাংলার গ্রীষ্মে (প্রকাশের জন্য)

বাংলার গ্রীষ্মে

মুহাম্মদ আবদুল মান্নান ইয়াকুবী

গ্রীষ্মে রবি নভোলোকে দীপ্তহাসি হাসে
যে হাসিতে অগ্নিদাহ বসুমতি নাশে।

দহনে তার  পথ ও প্রান্তর শুধু খাঁ খাঁ করে,
 ঘর-দুয়ার আর মাঠ-ঘাট যেন অগ্নিতে  যায় ভরে।

পথিক এবং পশু পাখি পানির পিপাশায়,
ছটপট করতে থাকে যেন বক্ষ ফেটে যায়।

ছোট নদী, ডোবা,খাল আর বাপী আছে যত, 
কেঁদে কেঁদে মাগে যেন পানি অবিরত।

সূর্যের প্রখর তাপে গাঁয়ে বাতাসের আশায়
লোকজন বসে বসে সময় কাটায় গাছ তলায়।
         
খরার তাপে ভষ্ম করে সোনালি ফসল,
নিঃস্ব হয়ে কৃষাণেরা ফেলে চোখের জল।

পাড়া-গাঁয়ে নেমে আসে মহামারী রোগ,
ঘটে এতে মৃত্যু এবং নানারূপ দুর্ভোগ।

 অনাবৃষ্টি দেখা দিলে পল্লিতে লোকজন, 
মহাপ্রভুর কাছে শুধু করে আবেদন।

শুক্রবারে গাঁয়ের কিছু ভক্ত মুসলমান,
ফিরনি-পায়েস গরীবদের আর মিসকিনদের বিলান।

কোরান খতম, তাহলিল, মাহফিল চলে নানা স্থানে, 
যেন প্রভু সন্তুষ্ট হোন ধরায় বারি দানে।

মাঝে মাঝে কালবোশেখি বীরত্বের ভাব দেখায়,
প্রবল  উন্মাদনায় আরও প্রলয়ের নাচ চালায়। 

গাছপালা ফুল, ফসল, শস্য, কুটির আর সব বন
শিকারে হয় পরিণত করলে সে নাচন।

জরা-জীর্ণ যত কিছু থাকে এ ধরায়,
তাড়িত হয় সবগুলো তার নাচনের লীলায়।

তার প্রলয়ের নাচের শাড়ির রঙ কুচকুচে কালো,
দ্রুত ঢেকে ফেলে এটি দিনের উজ্জ্বল আলো।

আনন্দে সে বজ্রনাদে চালায় বিজলির খেলা,
মাঝে মধ্যে তাজা তাজা প্রাণ নিয়ে যায় মেলা।

বিদ্রোহী এক বীরের মত হয়ে আগুয়ান,
প্রবীনে সে দিয়ে থাকে নবীনেরই প্রাণ।

জাগে এতে নবীনেরা নব উদ্দীপনায়,
রঙতরঙ্গে যেন তারা সমগ্র দেশ ভাসায়।

নিশিকালে চলে গাঁয়ে গীতি সারী-জারী 
আঙ্গিনাতে গল্প নিয়ে বসে পল্লিনারী।

জ্যোৎস্নারাতে গাঁয়ের পুরুষ নৈশভোজের পরে
বসে বসে গল্প করে উন্মুক্ত প্রান্তরে।

সমগ্র দেশ উৎসব মূখর থাকে নাচ-গান-মেলায়,
দোকানিদের হালখাতা আর মাঠে বলিখেলায়।

পল্লিগাঁয়ে ওড়ে ঘুড়ি নীলাকাশের পানে,
নানা রঙের ঘুড়িতে ব্যোম সাজে সর্বখানে।

সোনালু, জুঁই, কৃষ্ণচূড়া,বেলি, গন্ধরাজ,
আরো বহু ফুলে থাকে গ্রীষ্মকালের সাজ।

গাছে গাছে সুমিষ্ট ফল ঝুলে থরে থরে,
বৃক্ষশাখা মুখর রাখে পাখিরা গান করে।

ভরা থাকে আম, জাম, লিচু আনারস কাঠাল,
 মধুফলে প্রাণটা শীতল করে গ্রীষ্মকাল।

রসনাতে সরসতা গ্রীষ্মে করে দান,
যদিও তার দহনে হয় ধরনীটা ম্লান।
                      ........